বিশেষ প্রতিনিধি।। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের উপজেলার ৮ টি চা বাগানে নেই কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।এর ফলে মানসম্মত শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চা বাগানের অনগ্রসর জনগোষ্টির শিশুরা।বাগান গুলোতে বাড়ছে নিরক্ষরতার হার।
জানা জায়,ওই ৮টি চা বাগানগুলো উপজেলা দেওগাছ ইউনিয়নের অবস্থিত। এর মধ্যে চন্ডীছড়া চা বাগান,রামগঙ্গা চা বাগান, চাকলাপঞ্জি চা বাগান, চাঁনপুর জোয়ালভাঙ্গা চা বাগান,জঙ্গলবাড়ি চা বাগান,হাতিমারা চা বাগান, দেউন্দী চা বাগান ও লস্করপুর চা বাগান।সব মিলিয়ে এসব বাগানে ৩০-৪০ হাজার লোকের বসবাস।এর মধ্যে শুধুমাত্র চন্ডীছড়া চা বাগানের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব চলমান রয়েছে। কিন্তু বাকি ৭টি বাগানে সরকারি বিদ্যালয় নির্মাণের ব্যাপারে প্রশাসনিক কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
এসব চা বাগানে বাগান মালিকের পক্ষ হতে পরিচালিত দুই একটিতে নামমাত্র কিন্ডারগার্টেন থাকলেও সেসব বিদ্যালয়ে পড়াশোনার তেমন সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার পরিবেশ নেই।নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকাও।জরাজীর্ণ সেসব কিন্ডারগার্ডেন।নেই বৈদ্যুত সংযোগও। ফ্যানের অভাবে গরমে কষ্ট করে শিক্ষার্থীরা।নিবন্ধন না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে নতুন বই না পাওয়াসহ নানা সমস্যা জর্জরিত সেসব চা শ্রমিকের সন্তানেরা।ফলে এসব নানা প্রতিকূলতায় প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ঝড়ে যায় ওইসব চা বাগানের শিক্ষার্থীরা।
চা শ্রমিকরা জানান,অনেক বছর ধরেই চা বাগানের প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন শ্রমিকরা। সরকার এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ না করায় যুগ যুগ ধরে চা শ্রমিকের সন্তানরা শিক্ষায় পিছিয়ে আছে।
চুনারুঘাটের উপজেলার সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা(এটিও) খোরশেদ আলম জানান, এই ৮টি বাগানে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন বিকল্প নেই।এক্ষেত্রে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ও প্রয়োজন।
চুনারুঘাটের শিক্ষা কর্মকর্তা(টিও) নাজনীন সুলতানা জানান, সরকার নতুন করে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করছে না।এই ৮টি চা বাগানের মধ্যে চন্ডী চা বাগানের প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা ডিজি দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।অনগ্রসর চা শ্রমিকদের বাগানে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরী আমরা শীঘ্রই এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো।
চুনারুঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোঃ রবিন মিয়া জানান,বিষয়টি একান্তই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিষয়।এরপরেও আমাদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়ে আলোচনা করে একটি কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণের করে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের চেষ্টা চালাবো।
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল
Leave a Reply