প্রধান প্রতিবেদক!।।হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার সংলগ্ন উলুকান্দি গ্রামে বসবাসরত হরিজন (মুচি) সম্প্রদায়ের এগারটি পরিবার চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভূমির সংকট, বিদ্যুৎবিহীনতা, অপ্রতুল স্যানিটেশন ব্যবস্থা, শিক্ষার অভাব ও শ্রমের বৈষম্যের কারণে প্রতিনিয়ত টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ সংযোগের আলো এখনো ছুঁয়ে পৌঁছায়নি এই সম্প্রদায়ের ঘরে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিতে আশার আলো দেখলেও, ভোট শেষে তা রূপ নেয় হতাশায়। ফলে আজও হারিকেন ও কুপি বাতির আলোয় রাত পার করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
মাত্র ১৩ শতক জমির ওপর গাদাগাদি করে এই এগারটি পরিবার বসবাস করছে। তাদের অভিযোগ, স্থানীয় ভূমিখেকোরা ওই জমির কিছু অংশ জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। সংকুচিত পরিবেশে বসবাসের ফলে বেড়েছে নানা ধরনের সামাজিক ও স্বাস্থ্য সমস্যা।
এছাড়াও স্যানিটেশনের ভয়াবহ অভাব রয়েছে সেখানে। পুরো এলাকার জন্য রয়েছে মাত্র দুটি টয়লেট, যা দিয়ে প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। অপরদিকে, জুতা মেরামতের কাজের চামড়ার বর্জ্য পার্শ্ববর্তী খালে ফেলার কারণে জলদূষণ ও পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে করে পাশের বাসিন্দারাও পড়েছেন পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে।
অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে এই সম্প্রদায়ের অধিকাংশ শিশু বিদ্যালয়ের মুখ দেখে না। শিশু বয়সেই তারা পরিবারের হাল ধরতে বাধ্য হচ্ছে। দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আয় করে কোনোরকমে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন মুচি সম্প্রদায়ের কর্মজীবীরা।
বিয়েশাদি ও সামাজিক বিচারব্যবস্থা এখনো তাদের নিজ সম্প্রদায়ের ভেতরেই সীমাবদ্ধ। অধিকাংশ বিবাহের রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও যৌতুকের মতো সমস্যাও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, হরিজন সম্প্রদায়ের টিকে থাকা এবং পেশার মর্যাদা রক্ষায় জরুরি সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, ভূমি পুনরুদ্ধার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিলে এই জনগোষ্ঠীও সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন তিনি জানান, এ বিষয়ে আমার নজরে নেই।তাদের পক্ষ হতে যোগাযোগ করা হলে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা হবে।
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা / ইকবাল
Leave a Reply