সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ কৈতক-হায়দরপুর সড়কের কৈতক-কামারগাঁও অংশের ৭ কিলোমিটার অংশ যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে। দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে সংস্কারহীন এ সড়কটি ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনও সড়কটিতে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের কারণে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ, পরিবহন শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণ ছাতকের কৈতক থেকে জগন্নাথপুর উপজেলায় যাওয়ার এই রাস্তার কামারগাঁও পর্যন্ত রয়েছে অসংখ্য গর্ত আর খানাখন্দ। রাস্তার ইট সুড়কিও উঠে গেছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সড়ক বেহাল হওয়ার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করতে আগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগলেও এখন দুরবস্থার কারণে সময় লাগছে প্রায় এক ঘণ্টা। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে জনসাধারণের।
স্থানীয় অটোরিকশাচালক মুহিবুর রহমান বলেন, ১২ বছর ধরে এ সড়কে সিএনজি অটোরিকশা চালাই। আগে যেখানে ১৫/২০ মিনিট লাগতো সেখানে এখন সময় লাগে এক ঘণ্টা। এছাড়া প্রতি মাসেই গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় তা পরিবর্তন করতে হয়।
সমতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষক গৌছুল হক নাঈম বলেন, ৮ বছর ধরে নিয়মিত এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। সড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে যে ধূলোবালির কারণে মানুষের চেহারা চেনা যায় না। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাজ্জাদ আলী বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এই সড়কে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে জলাশয় তৈরি হয়ে যায়। বর্তমানে সড়কটি মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এ পথ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে নানা দুর্ঘটনায় সম্মুখিন হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে বিশেষ করে অন্তঃসত্ত¡া নারী, অসুস্থ ও বয়স্ক লোকজনের যাতায়াত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কখনো কখনো মানুষ অসুস্থ হলেও এ পথ দিয়ে নিয়ে যেতে বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, পথচারীরা এ পথ দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ছাতক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটির তিন কিলোমিটার অংশ সংস্কারে টেন্ডার হয়েছে। শিগগির কাজ শুরু হবে।
ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির ৭ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহবুব এন্টারপ্রাইজ। এই সপ্তাহে তিন কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হবে। বাকি রাস্তা সংস্কার করার জন্য আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাবো। পরবর্তী প্রকল্পে বাকি রাস্তা সংস্কার করা হবে।
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল
Leave a Reply