1. anjhonroy1@gmail.com : Anjhon Roy : Anjhon Roy
  2. admin@inathganjbarta.com : inathganjbarta :
  3. iqbalpress02@gmail.com : ইকবাল তালুকদার : ইকবাল তালুকদার তালুকদার
  4. manna820@gmail.com : আলী জাবেদ মান্না। : আলী জাবেদ মান্না।
  5. masudsikdar26@gmail.com : Masud Sikdar : Masud Sikdar
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৯ অপরাহ্ন

কমেছে চায়ের উৎপাদন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা

  • আপডেটের সময়: বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৪২ ভিউ

বার্তা ডেস্ক।। বাংলাদেশের চা শিল্পে ২০২৩ সালে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলেও সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালে ১৬৮টি চা-বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা-চাষিদের হাত ধরে ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল, যা চা শিল্পের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কিন্তু ২০২৪ সালে উৎপাদনে নানা কারণে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষ, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, বিরূপ আবহাওয়া এবং কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়ার মতো সমস্যার কারণে চায়ের উৎপাদন কমে গেছে বলে জানা গেছে।

 

 

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ১৬৯টি চা-বাগানে মাত্র ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৫১ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। যদিও ডিসেম্বর মাসে উৎপাদনের পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবুও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ কোটি ১২ লাখ ৬৯ হাজার কেজি চা উৎপাদন কম হবে।

 

চা বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশীয় চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি, কিন্তু জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭ কোটি ৬৬ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের উৎপাদনের হিসাব জানুয়ারি পর্যন্ত চ‚ড়ান্ত না হওয়া সত্তে¡ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখনো একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

জানা গেছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে চায়ের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সার, সেচ এবং কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রমিকদের ধর্মঘট এবং উৎপাদনে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে চা শিল্প চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে তীব্র খরা এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা চা গাছের জন্য অনুক‚ল ছিল না, যার ফলে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একদিকে উৎপাদন কমে গেছে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। যার ফলে বাগান মালিকদের জন্য লোকসানের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

 

এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) বাগানগুলোতে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য দীর্ঘসময় ধর্মঘট চলায় উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এনটিসি চা-বাগানগুলোর ১২টি বাগান দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এসব সমস্যার সমাধান না হলে চা শিল্পের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া চায়ের গড় দাম বাড়লেও তা উৎপাদন খরচের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। গত বছর এক কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২২৬ টাকা। কিন্তু এ বছর চায়ের উৎপাদন খরচ বেড়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় পৌঁছেছে। সেই তুলনায় নিলামে চায়ের গড় দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল, যার কারণে বাগান মালিকদের লাভের পরিমাণ কমে গেছে।

 

চা শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। বিশেষ করে শ্রমিক অসন্তোষ সমাধান, উৎপাদন খরচ কমানো এবং চায়ের বাজারমূল্যের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে চা উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

 

ন্যাশনাল বেকার্সের সিনিয়র ম্যানেজার অঞ্জন দেব বর্মন জানান, নিলামে আগের বছরের চেয়ে গত বছর চায়ের সরবরাহ কমেছে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা সাড়ে ৯ কোটি কেজি চা পাতা। এই পরিমাণ চা পাতা বাগানে উৎপাদিত হলে তা দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা সংসদের সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান ও জেমস ফিনলে চা কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, ২০২৪ সালে চা-বাগানে গ্রীষ্মকালে তীব্র খরা বয়ে গেছে। তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছিল। এই তাপমাত্রা চা গাছের জন্য অনুক‚ল ছিল না। এছাড়া সার, সেচ, কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচের কম মূল্যে চা বিক্রির প্রভাবের কারণে চায়ের উৎপাদন কম হয়েছে। তাছাড়া জাতীয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ১০ ভাগ অবদান রাখা এনটিসির চা-বাগানগুলোতে বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে গত চা মৌসুমে দীর্ঘ সময়জুড়ে শ্রমিক ধর্মঘট চলায় বাগানের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এসব মিলিয়ে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাঘাত ঘটে। দেশের বৃহত্তম চা কোম্পানি ফিনলের চা-বাগানগুলোতেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ ভাগ উৎপাদন কম হয়।

 

 

সরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর মহসিন মিয়া মধু বলেন, চায়ের উৎপাদন খরচ অব্যাহতভাবে বাড়ছে, যা বাগান মালিকদের জন্য অস্বস্তিকর। যদি উৎপাদন খরচ এবং বিক্রির দাম না বাড়ে, তবে চা শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. ইসমাইল হোসেন জানান, ২০২৪ সালে চায়ের উৎপাদন কম হওয়ার অন্যতম কারণ এনটিসির বাগানগুলোতে শ্রমিক অসন্তোষ এবং উত্তরবঙ্গের বাগানগুলোতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি। উত্তরবঙ্গের বাগানগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং খরার কারণে উৎপাদন কমেছে। বাকি বাগানগুলোর উৎপাদন হিসাব পাওয়া গেলে পরিস্থিতির পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে।

 

সুত্রঃ দৈনিক জৈন্তা বার্তা / ইকবাল

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অথবা ভিডিও কপি করা সম্পূর্ণ বেআইনি @2025
Desing & Developed BY ThemeNeed.com