বার্তা ডেস্ক।। এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অত্যাধুনিক ডিএনএ ল্যাব স্থাপিত হচ্ছে। হাসপাতালের পুরোনো জরুরি বিভাগের সামনের বারান্দায় স্থাপন করা হচ্ছে এই ল্যাব। এতে সিলেট বিভাগের প্রায় দুই কোটি মানুষের ডিএনএ পরীক্ষার দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ল্যাব স্থাপন প্রসঙ্গে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির বলেন, এই ল্যাবের মাধ্যমে আমরা ডিএনএ পরীক্ষা-সংক্রান্ত জটিলতাগুলো সমাধান করতে পারব। এটি শুধু রোগী সেবা নয়, বিচারিক কার্যক্রমেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা করতে এতদিন মানুষকে ঢাকায় যেতে হতো। নতুন এই ল্যাবের মাধ্যমে সেই ভোগান্তি দূর হবে।
তিনি বলেন, নারী নির্যাতন বিশেষ করে ধর্ষণ মামলায় ডিএনএ পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় ডিএনএ পরীক্ষার ফল আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এ কারণে অনেকে হয়রানির শিকার হন।
ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, ল্যাব স্থাপিত হলে দ্রুততম সময়ে ডিএনএ পরীক্ষা সম্ভব হবে। এটি তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায়ও দ্রুততা আনবে। আমরা প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ ডিএনএ নমুনা ঢাকায় প্রেরণ করি। ঢাকায় কাজের চাপ থাকায় নমুনা পরীক্ষা শেষে ফেরত আসতে অনেক সময় লাগে। এ কারণে অনেক সময় বিচারিক প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়।
রাজধানী ঢাকার বাইরে এই প্রথম বিভাগীয় শহরে এমন একটি ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ল্যাব স্থাপনের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেশে সংগঠিত বিভিন্ন অপরাধের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে ডিএনএ পরীক্ষার বিকল্প নেই। অপরাধী শনাক্তকরণ, পিতৃত্ব, মাতৃত্ব নির্ধারণ ও অজ্ঞাতনামা মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন কারণে ডিএনএ পরীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। সারা দেশ থেকে ডিএনএ নমুনা জমা হয় ঢাকার ল্যাবে। ঢাকায় পাঠানো নমুনা পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে তদন্তকাজে ধীরগতি দেখা দেয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, প্রাথমিকভাবে ডিএনএ ল্যাবের স্থান নির্ধারণ এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন অপেক্ষা ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হওয়ার, যা সিলেটসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। সিলেটে ডিএনএ ল্যাব স্থাপন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দীর্ঘসূত্রতা থেকে মুক্তি পাবেন সিলেটসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ। মানুষ সময়মতো ন্যায়বিচার পাবেন। সিলেটের এই ল্যাব বিচারিক কাজে সময় সাশ্রয় করবে এবং অপরাধ তদন্তের গতি বাড়াবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
সূত্র : সময়ের আলো
Leave a Reply